"ঘরে কোমড় সমান জল।জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা।ঘরে বন্ধ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো"!
"ঘরে কোমড় সমান জল।জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা।ঘরে বন্ধ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো"!
"ঘরে কোমড় সমান জল।জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা।ঘরে বন্ধ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো"!
সময়ের মুখ ডিজিটাল: টানা একমাস ধরে জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা।পঞ্চায়েতের ঢালাই রাস্তা এখনো দেড় ফুট জলের তলায়। কোথাও কোথাও ঘরে কোমড় সমান জল।ঘরে বাইরে জল নিয়ে কার্যত দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের কয়েকশ পরিবার।জলমগ্ন এলাকার মানুষ দুর্গাপুজোর আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বুধবার ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন চলছে। কিন্তু মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের জলমগ্ন এলাকায় লক্ষ্মীপুজো বন্ধ।তবে,ত্রাণ শিবিরেই লক্ষী পূজোর আয়োজন করেছেন আশ্রিত পরিবার।ইছামতি এবং যমুনা নদী সংস্কারের অভাবেই এ বছর জলমগ্ন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।দ্রুত ইছামতি ও যমুনা নদী সংস্কারের দাবিও তুলেছেন মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দারা।
মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের পাশ দিয়ে গিয়েছে যমুনা নদী।এলাকার জল নিকাশীর অন্যতম হল যমুনা নদী।বৃষ্টির জল যমুনা হয়ে মেশে ইছামতীতে।কিন্তু ইছামতি সংস্কার না হওয়ায় দুর্গাপুজোর আগেই পরপর নিম্নচাপের প্রবল বৃষ্টিতে ইছামতি এবং যমুনা নদী ছাপিয়ে জল ঢুকে পড়ে লোকালয়ে।এরফলে গাইঘাটা,বনগাঁ,বাগদা ব্লক সহ হাবরা ১ নম্বর ব্লকের মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের নটি বুথের উত্তর,দক্ষিণ বেতপুল,শক্তিনগর, উলুডাঙ্গা ২ নম্বর কলোনী,রঘবপুর উত্তর,দক্ষিণ কলোনী,রানিডাঙ্গা,সুকান্ত্পল্লি সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম জলমগ্ন হয়েছে।টানা একমাস ধরে জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছেন কয়েকশ পরিবার। ঘরের ভিতরে বৃষ্টির জল ঢুকে কোথাও কোমড় সমান হয়েছে।পঞ্চায়েতের ঢালাই রাস্তা থেকে পিচ রাস্তা সবই জলের তলায়। নৌকা এখন জলমগ্ন এলাকার মানুষের যাতায়াতের প্রধান ভরসা।ত্রাণের খাবারও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে নৌকা করেই। মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের এই নটি বুথ এলাকায় কোথাও কোথাও এখনো জলের পরিমাণ দেড় থেকে আড়াই ফুটের সমান।ঘরে জল ঢুকে পড়ায় সরকারি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গেছে,মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েত এলাকায় চারটি সরকারি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।সেখানে জলমগ্ন এলাকার ৪৫ টি পরিবারের লোকজন ত্ আশ্রয় নিয়েছেন।ত্রাণ শিবিরে বাইরে বহু মানুষ হয় আত্মীয়ের বাড়িতে নয়তো অন্য জায়গায় ভাড়া বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।ফলে টানা একমাস ধরে দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের কয়েকশ পরিবার।
জলমগ্ন থাকায় উত্তর বেতপুল গ্রামে সার্বজনীন দুর্গাপুজো হয় নি।লক্ষ্মীপুজোও বন্ধ মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের জলমগ্ন এলাকায়।বুধ এবং বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপুজোর ব্যস্ততা।সংসারের ধণ সম্পত্তি বৃদ্ধির আশায় লক্ষীপূজোর আয়োজন করেন পরিবারের গৃহবধুরা।কিন্তু জলমগ্ন এলাকার পরিবার নিজেদের ঘরে লক্ষ্মীপুজো করতে পারছেন না।তাই,সরকারের ত্রাণ শিবিরে থেকেই লক্ষীপূজোর আয়োজন করেছেন আশ্রিত পরিবার।মছলন্দপুরের শ্রীনগর মিলন সংঘ সংলগ্ন এলাকার একটি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন দেবানন্দ চক্রবর্তী।এই ত্রাণ শিবিরেই তিনি লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করেছেন।
দেবানন্দ চক্রবর্তী বলেন,"গত একমাস ধরে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছি।ঘরের ভিতর এখনও জল।ত্রাণ শিবিরটাই এখন আমাদের ঘর।তাই ,এখানেই কোনোও লক্ষীপূজোর আয়োজন করেছি।"
গাইঘাটা দক্ষিণ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন,"গত একমাস ধরে মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের নটি বুথ এলাকা কার্যত বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।এখনও এলাকা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে।নৌকা করেই আমরা বানভাসীদের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি।জলমগ্ন এলাকার মানুষ দুর্গাপুজোর আনন্দ থেকে বঞ্চিত থেকেছেন।লক্ষ্মীপুজোও বন্ধ।তবে,ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া একটি পরিবার লক্ষ্মীপুজো করেছেন।রাজ্য সরকার সম্প্রতি ইছামতি সংস্কারের কাজ শুরু করেছে।দ্রুত ইছামতি নদীর ঢিবি কেটে পরিষ্কার করা হবে।তাহলে,জলমগ্ন এলাকার মানুষ স্বস্থি পাবেন।"